সরকার টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য নিত্যপণ্য বিক্রি করলেও কক্সবাজারের ৪৩ হাজার ১৩৪ জন উপকারভোগী এ সুবিধা পাচ্ছেন না। যথাসময়ে নিবন্ধিত স্মার্ট কার্ড অনলাইনে একটিভ না হওয়ায় এবং স্থানীয় পর্যায়ে নিবন্ধন–সংক্রান্ত প্রচারণার অভাবে তারা দীর্ঘ ৭ মাস ধরে সরকারি এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সারা বছর ধরে শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ডধারীদের জন্য এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোন কারণে এত বিপুল সংখ্যক উপকারভোগী বাদ পড়েছেন, সেই দায় কোনো দপ্তরই নিতে চাইছে না। বর্তমানে কক্সবাজার জেলায় ৩৬ জন ডিলারের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে চাল, ডাল, তেল, চিনি ইত্যাদি নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুগ্ম পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব উপকারভোগী কার্ড একটিভ করতে পারেননি, তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি জমা দিয়ে পুণরায় নিবন্ধিত হতে পারবেন। এরপর কার্ড অনলাইনে সক্রিয় হলে তারা পরের মাস থেকেই টিসিবির পণ্য নিতে পারবেন।’
তবে এ বিষয়ে যথাযথ প্রচার না থাকায় হতদরিদ্র পরিবারগুলো প্রতি মাসেই বঞ্চিত হচ্ছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. ইমরান হোসাইন সজিব বলেন, ‘৪৩ হাজার ১৩৪ জন উপকারভোগীর কার্ড একটিভ হয়নি—বিষয়টি আমার জানা ছিল না। টিসিবির বিষয়গুলো দেখভাল করেন আমার একজন কর্মকর্তা। তার সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখব কেন এতদিন কার্ড একটিভ হয়নি। এখানে কারো অবহেলা আছে কিনা, তাও যাচাই করা হবে।’
টিসিবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়—কক্সবাজারে নিবন্ধিত উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ৬১ হাজার ৯৬৭ জনের কার্ড। অনলাইনে একটিভ না হওয়ায় বাদ পড়েছেন ৪৩ হাজার ১৩৪ জন।
উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়—চকরিয়ায় ৪ হাজার ২৮৩ জন, সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৬৩৬ জন, কুতুবদিয়ায় ১ হাজার ৮১৮ জন, মহেশখালীতে ৭ হাজার ৬০৭ জন, পেকুয়ায় ১ হাজার ৭৯১ জন, রামুতে ৭ হাজার ৪১৮ জন, টেকনাফে ৪ হাজার ৯১৭ জন, উখিয়ায় ৭ হাজার ৩২৬ জন এবং ঈদগাঁও উপজেলায় ২ হাজার ২৭৫ জন উপকারভোগী কার্ড সক্রিয় না হওয়ায় পণ্য পাচ্ছেন না।
বাদ পড়া উপকারভোগিরা নিত্যপণ্য সংগ্রহ করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কক্সবাজার সদরের পিএমখালীর টিসিবির ডিলার আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ পিএম খালী ইউনিয়নের ২৪০০ জন উপকারভোগীকে স্বল্পমূল্যে মালামাল দিয়ে এসেছি। বর্তমানে উপকারভোগি রয়েছে ১ হাজার ৩৫৭ জন। অনলাইন এক্টিভিট না হওয়ায় অবশিষ্টরা মালামাল সংগ্রহ করতে পারছে না। ফলে আমরাও চট্টগ্রাম থেকে বরাদ্দ কম পাচ্ছি। তাদের এক্টিভেট করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলে তারা পুণরায় টিসিবির আওতায় আসতে পারবে। স্বল্পমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারবে বলে তিনি জানান।
এদিকে ৪৩ হাজার উপকারভোগি দীর্ঘ সাত মাস যাবত টিসিবির পণ্যবঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো: ইমরান হোসাইন সজিব বলেন- ৪৩ হাজার ১৯৪ জন উপকারভোগী স্মার্ট কার্ড এক্টিভিট করতে পারেনি বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমার একজন কর্মকর্তা টিসিবির উক্ত বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন। আমি তাঁর সাথে কথা বলে কেন দীর্ঘদিন যাবৎ তারা স্মার্ট কার্ড একটিভ করতে পারেনি সে বিষয়টা জানার চেষ্টা করব। ৪৩ হাজার ১৩৪ জনের স্মার্ট কার্ড যদি একটিভ করা না হয় সেখানে কারো অবহেলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। উক্ত উপকারভোগীদের স্মার্ট কার্ড একটিভ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৭৯ জন টিসিবি নিবন্ধিত উপকারভোগি রয়েছে। এর মধ্যে একটিভ রয়েছে ৬১ হাজার ৯৬৭ জনের অনলাইন স্মার্ট কার্ড।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |