গ্রীষ্মের দাবদাহ রোদ শেষে বৃষ্টি নামতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির মাত্রা আরো বেশি হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফেও কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলি জমি, মাঠ, পতিত জমিতে ব্যাঙের দেখা মেলেছে। মাঠ ভরে গেল হলুদ কোলাব্যাঙে। ব্যাঙের মহাসমাবেশে পুরো মাঠ হলুদ হয়ে গেছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে শোনা যায় ব্যাঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাকাডাকি।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টেকনাফের উপজাতি চাকমারা কোলা ব্যাঙ নিধনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
শনিবার (১৪ মে) রাতে ৪ চাকমা তরুণ চার বস্তা কোলা ব্যাঙসহ নানা প্রজাতির ব্যাঙ ধরে উপজেলার শামলাপুর বাজার হয়ে যাচ্ছিল। এসময় তাদের পথ গতিরোধ করে সর্তক করেন স্থানীয় পরিবেশকর্মী আমির হোসেন ও মোহাম্মদ শাহজাহান। পাশাপাশি ব্যাঙ নিধনের ফলে পরিবেশের ক্ষতিকর বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন।
কোলা ব্যাঙ নিশাচর প্রাণী। এটি সোনা ব্যাঙ বা ভাউয়া ব্যাঙ নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম Asian Bull Frog এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hoplobatrachua tigerinus। এটি Dicroglossidae পরিবারের ও Hoplobatrachus গণের অন্তর্ভুক্ত উভচর প্রাণী। বাংলার পথে-প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা কোলা ব্যাঙ অন্যতম কৃষি উপকারী প্রাণী।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই ব্যাঙের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।পোকামাকড় খেয়ে ফসলের সুরক্ষা করে। ফলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনা। জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি অনেক জীবজন্তু এবং পাখির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই কোলা ব্যাঙ। যা খাদ্য-শৃঙ্খলের সহায়ক হয়ে জীবজগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
কিন্তু ব্যাপক কীটনাশক ব্যবহার এবং বন-জঙ্গল উজাড় করায় জীববৈচিত্র্য রক্ষাকারী ব্যাঙ বিলুপ্তির পথে।প্রতিনিয়তই নষ্ট হচ্ছে এদের বাসস্থান ও প্রজনন-আশ্রয়গুলো। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কোলা ব্যাঙসহ নানান প্রজাতির কৃষি উপকারী ব্যাঙ।
উপজাতি চাকমাদের নির্বিচারে ব্যাঙ নিধনে টেকনাফের স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহল শঙ্কা প্রকাশ করেন। এইভাবে ব্যাঙ নিধন কার্যক্রম চলমান থাকলে জমির উর্বরতা নষ্ট হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক নাজমুল হুদার কাছে ব্যাঙ নিধনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি মৎস্য বিভাগে অবহিত করতে বলেন। টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে অবহিত করলে তিনি বনবিভাগের দায়িত্ব বলে এড়িয়ে যান।
টেকনাফ উপজেলা বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এইটি পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তারপরও আমাদের জানালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |