রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন

নক্ষত্রপুঞ্জের মতো জ্বলজ্বলে পতাকা উড়িয়ে আছো আমার সত্তায়

বার্তা পরিবেশক
আপডেট সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২, ১:২১ অপরাহ্ন

১৫ আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। ধন‍্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের উপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ এই দিনে বাঙালির জাতির বিরল স্বপ্নের অপমৃত‍্যু হয়। এই দিনটি শুধু বাঙালি জাতির জন‍্য নয়। সারা বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত, মুক্তিকামী মানুষের জন‍্য নজিরবিহীন র্মমস্পর্শী শোকের দিন। বাঙালি জাতিসত্তার সহস্র বছরের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল বিশ্বের মানচিত্রে বাঙালি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।১৯৭১ এর দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে লাখো মা-বোনের সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগে বাঙালির এই সোনালী স্বপ্ন পূর্ণতা লাভ করে। বাঙালি পায় স্বাধীন দেশ। পৃথিবীর বুকে মানচিত্র ,লাল-সবুজের পতাকা। আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা, মুক্তি ও বিজয়ের স্বাদ।

বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতি হিসেবে আমরা যার কাছে সর্বাধিক ঋণী তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুধু মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনের মহানায়ক নন, ১৯৪৭ এর দেশ বিভক্তি, ‘৪৮ এর জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৬ এর শাসনতন্ত্রের আন্দোলন, ‘৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন, ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ‘৭০ এর নির্বাচনসহ প্রতিটি আন্দোলনের সংগ্রামী নেতা হিসেবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এই বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার চোখে ছিল এক বর্ণিল স্বপ্ন। বাঙালির উপর ছিল পূর্ণ আস্থা। বাংলাদেশের পথ-প্রান্তকে তিনি মনে করতেন তাঁর নিরাপদ বিশ্রামাগার। যেখানে তিনি শান্তির আশ্রয় পাবেন। প্রত্যেকটা বাঙালি যেন বঙ্গবন্ধুর পরম প্রিয়জন। যার বজ্রকন্ঠের শাণিত ধারায় পুরো বাংলার লাখো লাখো মানুষের সমাগম হতো, ঝাঁপিয়ে পড়তো কঠিন রণক্ষেত্রে। সেই নেতা কখনো ভাবতে পারেনি বাংলাদেশেরই ঘাতকেরা তাঁর ভালবাসার হৃদয়টা বুলেটের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে দিবে! এই এক বিস্ময়কর কলঙ্কিত অধ্যায়। ১৫ আগসট বাংলার আকাশ-বাতাস আর প্রকৃতি অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। আগস্টের এই দিনে শ্রাবণ একাকার হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের মর্মছেড়া অশ্রুর প্লাবনে। ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। ঘাতকের নির্মম করাল গ্রাস থেকে রেহাই পায়নি ১১ বছরের শেখ রাসেলও। তার দুচোখ ভরা প্রাণভিক্ষার আকুতিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি ঘাতকেরা। বেঁচে থাকলে শেখ রাসেল হতে পারতো বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য সারথি। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য নৃশংসতম পরিকল্পিত হত্যা কান্ডের দিন এই ১৫ই আগস্ট। এই শোকাবহ আগস্ট মাসে দেশে বিদেশে যেখানে বাঙালি অবস্থান করে তারাও শোকে মুহ্যমান হয়ে যায়। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সীমাহীন ভালবাসাই ছিলো বড় শক্তি এবং বড় দূর্বলতা। তাই তিনি তাঁর অতি নিকটে থাকা মানুষরূপী মীর জাফর, জগৎ শেঠ, রায় দূর্লবের মতো বিশ্বাস ঘাতকদের চিনতে পারেননি। আজ জাতির মহানায়কের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকীতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির প্রতি জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ও তাঁর পরিবারের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করি। ১৫ আগস্ট এটি কেবল সরকারি অনুষ্ঠান মালাই নয়, বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম জাতির সুষ্ঠ ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার এক অবিরল প্রয়াস। ১৫ আগস্ট শহীদের স্মরণে টেকনাফ সরকারি কলেজ আয়োজন করেছে শেখ রাসেলকে নিবেদন করে এই দেয়ালিখা- ‘হৃদয়ে শেখ রাসেল’
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাঠি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ-শান্তি, স্বপ্ন এবং আশা আকাঙ্ক্ষাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি।
আমৃত্যু একটি গণতান্ত্রিক, প্রগতিবাদী ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশের যথাযথ রূপায়ণই হবে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সর্বোত্তম উপায়। সেই লক্ষে জাতীয় শোক দিবসের প্রতিজ্ঞা হোক শোককে শক্তিতে রূপান্তর করা।

পরিশেষে বলি সভ‍্যতার অমোঘ বাণী-
“যতদিন রবে এই পদ্মা, মেঘনা, গৌরী, যমুনা বহমান,
ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান”।

– পারিয়েল সামিহা শারিকা, প্রভাষক বাংলা বিভাগ, টেকনাফ সরকারি কলেজ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো সংবাদ পড়ুন...
  • নামাজের সময়সূচি
  • রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সূর্যোদয় :- ৫:১০ সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯
    নাম সময়
    ফজর ৪:১৫
    যোহর ১২:১০
    আছর ৪:৫০
    মাগরিব ৬:৪৫
    এশা ৮:১৫