কক্সবাজার সদরের লিংকরোড এলাকায় মিছবাহ উদ্দিন (৪৬) নামে এক ব্যবসায়ীর ‘রহস্যজনক মৃত্যু’ হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ী মিজবাহ উদ্দীন চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নে কামাল উদ্দিনের ছেলে।
পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি কক্সবাজারের লিংক রোড এলাকায় থাকতেন। ২০১০ সালের দিকে তিনি কক্সবাজার থেকে বিয়ে করেন। তুষের ব্যবসা, লাকড়ী, ডেইরি ফার্মসহ আর-ও কয়েকটি ব্যবসা ছিল তার। পাশাপাশি তিনি বাঁশখালী সমিতি কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লিংক রোডের আল মজিদ টাওয়ারের ৪র্থ তলায় তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। তার এক ছেলে ও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে তাওসিফ ৮ম শ্রেণি, মেজো মেয়ে তাসনুবা ৫ম ও ছোট মেয়ে তাসনিয়া প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৫টার সময় বাচ্চাদের পড়াতে আসেন গৃহ শিক্ষক। তিনি তাঁকে দরজা খুলে দেন। ৫ টা ১০ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে নিচে নামে এবং ৫ টা ৩৭ মিনিটে তিনি বাসার ছাঁদে উঠেন। ৬ টা ৩৭ মিনিটের দিকে তাঁকে নিচে পড়তে দেখা যায়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী রিফাত ইয়াসমিন বলেন, ‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তাকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। আমার স্বামীর কোমর সহ শরীরের কয়েকটি স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দিনের শশুর মনিরুল হক বলেন, ‘মেজবাহ উদ্দিন আমার প্রথম মেয়ের জামাই। তিনি সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। তার সাথে কারোও বিরোধ ছিল সেই কথাও কখনো শুনিনি। তবে তার মৃতদেহের মধ্যে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। আমাদের আশঙ্কা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
নিহত ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দিনের সাথে ব্যবসা করতেন এমন একজন ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মেজবাহ উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিসিক এলাকায় অনেকগুলো সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। ওই গ্রুপগুলো তার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতে পারত না। হয়তো সে কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা ব্যবসায়ী সমাজ এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
নিহতের স্বজনদের বরাতে বাঁশখালী সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমদ বলেন, ‘সচরাচর কোন স্বাভাবিক ও সুস্থ ব্যক্তি কোন ভবনের ছাদ বা স্থান থেকে নিচে পড়ে গেলে শোর চিৎকার আর নড়াচড়া করার কথা। কিন্তু সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে তাতে এ ধরণের কোন দৃশ্যের দেখা মিলেনি। সুলতান আহমদ জানান, মেজবাহ উদ্দিনের কক্সবাজারে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ছিল। একটি জমি নিয়ে তার সঙ্গে কতিপয় লোকজনের মধ্যে ব্যবসায়িক দ্বন্দ ছিল। তাই ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড কিনা তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি।’
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান বলেন, খবর পেয়ে সকাল ১০ টার দিকে সদর উপজেলার লিংক রোড এলাকায় আল মজিদ টাওয়ারের পেছন থেকে পুলিশ ওই ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে। ওই ভবনের সিসি ক্যামেরার অনেক ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজগুলো পর্যালোচনাসহ ঘটনার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি আরও বলেন, পরিবারের থেকে এখনো কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। কেউ যদি না-ই আসে তাহলে বাদী হয়ে মামলা করবে।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় মুহুরী পাড়া জামে মসজিদে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাঁশখালী নিজ এলাকায় রাত ১১ টায় ২য় জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |