কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে ওয়াজ মাহফিলে বিএনপি নেতাদের অতিথি না করায় আয়োজক কমিটির কয়েকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। যদিও আয়োজক কমিটির সদস্যরাও বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। তবে ওয়াজ মাহফিল নয় ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে এরকম ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। মারধরে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কসহ ৪ জন আহত হয়েছে।

জানা যায়, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজার দারুল আরকান ক্যাডেট মাদ্রাসায় ৪ ডিসেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য হন। আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্তে স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিমকে প্রধান অতিথি ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আজিজুর রহমানকে সভাপতি করেন। এতে মনঃক্ষুণ্ণ হন আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন। তারা মাহফিলের সভাপতি ও প্রধান অতিথির পদ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এরই জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্ধারীঝাড় বাজারে মাহফিল আয়োজক কমিটি মাহফিলের চাঁদা আদায় করতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের সভাপতির অনুসারীরা। এসময় মারধরের ঘটনা ঘটে।

এতে আহত হন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বাদল ইসলাম (৪০) যুগ্ম আহবায়ক রব্বানী মিয়া ও কৌশিক আহমেদ।

আহত আজাহারুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসাটি বাড়ির পাশে হওয়ায় আমাদের কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে রাখা হয়েছে। পরে আমাদের সবার পরামর্শে ইউনিয়নের দুই ব্যক্তিকে সভাপতি ও প্রধান অতিথি নির্বাচন করি। এ ব্যাপারটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও যুবদল সভাপতির পছন্দ হয়নি। তাদেরকে মাহফিলের সভাপতি ও প্রধান অতিথি না করায় বিভিন্ন সময় আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমরা কয়েকজন মাহফিলের চাঁদা আদায় করতে বাজারে গেলে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে।

এর আগে মাহফিলের যাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে তাকে না থাকার জন্য তারা শাসিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৪ ডিসেম্বর বুধবার মাদ্রাসার বাৎসরিক মাহফিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। মাদ্রাসার আশেপাশের বিএনপির কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। মাহফিল উপলক্ষে তারা বাজারে টাকা কালেকশন করছিলেন হঠাৎ তাদের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল এসে আক্রমণ করে। মাহফিলে নাম থাকা আর না থাকা বিষয় নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

আন্ধারীঝাড়র যুবদলের সভাপতি শাহাদৎ হোসেন জানান, মাহফিলে সভাপতি বা প্রধান অতিথি নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। ওদের সাথে থাকা বাদল বিভিন্ন সময় আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে আসছেন। তাদের বাপ-মা নিয়ে গালিগালাজ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এসময় সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এছাড়া আর কিছু না। মাহফিল নিয়ে আমাদের কোনো কিছু হয়নি।

এ বিষয়ে কথা বলতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কালাম সরকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।