শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ

ভাইস-প্রিন্সিপাল বাবার কক্ষে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ অত:পর খুন

মু. শেখ রাসেল
আপডেট শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩, ৯:৩২ পূর্বাহ্ন

টেকনাফে শিশু ফারিহাকে ধর্ষণের পর হত্যা অত:পর হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেও ঘাতক এরফানের রেহাই মিলেনি। ঘটনার ২৩ ঘন্টা পর র‍্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৫) সদস্যরা ভিকটিমের লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘাতক এরফানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

নিহত শিশু হ্নীলা ইউপির মৌলভী বাজার এলাকার ছানা উল্লাহর কন্যা। সে হ্নীলা দারুস-সুন্নাহ মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। জানা যায়, মা-বাবার দাম্পত্য কলহের জেরে দীর্ঘদিন ধরে মায়ের সঙ্গে হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়া নানার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করে আসছিলেন শিশু ফারিহা (৮)।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৫ টার দিকে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার টয়লেটের পেছনের নর্দমা থেকে ওই শিশুর নিথর দেহ পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, ২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় মামার বাড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার হ্নীলা ইউপির পশ্চিম সিকদার পাড়া এলাকা থেকে শিশু ফারিহা খানম জেরিনকে অপহরণ করা হয়। পরে ভিকটিমের মায়ের নিকট ০১৮৪৬-৪৫৫৫০৫ নং থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং মুক্তিপণ না দিলে সকালে মেয়ের লাশ পাবে বলে হুমকি দেয়। তাৎক্ষণিক এবিষয়ে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এইদিকে অপহরণের বিষয়টি মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাটি র‌্যাব-১৫ এর নজরে আসে এবং র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি ও আভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ জুলাই র‌্যাবের আভিযানিক দল মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত হ্নীলা পানখালী এলাকার মুফতি আলী আহমদের পুত্র মোহাম্মদ এরফানকে (১৭) দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে হ্নীলা দারুস-সুন্নাহ মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল (সহকারী পরিচালক) মুফতি আলী আহমদের পুত্র। ভিকটিম তার দুঃসম্পর্কের ভাগ্নী। ঘটনার দিন অর্থ্যাৎ গত ২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে ফারিয়া খানম জেরিন বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি দোকানে গেলে ঘাতক এরফান খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় তার বাবার অফিস কক্ষে নিয়ে যায় এবং দরজা বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য ‘নাইলন দড়ি’ দিয়ে শ্বাসরোধ করে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরবর্তীতে খুনের ক্লু নিরুদ্দেশ করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের পরিহিত কাপড়-চোপড় পলিথিনে মুড়িয়ে নালায় লুকিয়ে ফেলে এবং গভীর রাতে লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে মাদ্রাসার পিছনে একটি নর্দমায় ফেলে চলে আসে।
ঘাতক এরফান আরো জানায়, বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণের টাকা দাবী করে।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মেজর সৈয়দ শফিকুল হক সংবাদ সম্মেলনে এই লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিয়ে ঘাতক ইরফানকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে কী কারণে এই ধরণের লোমহর্ষক ঘটনার সুত্রপাত তা নিয়ে জনমনে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা চলছে। হৃদয় বিদারক এই ঘটনার পর সাধারণ অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো সংবাদ পড়ুন...
  • নামাজের সময়সূচি
  • শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সূর্যোদয় :- ৫:১০ সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯
    নাম সময়
    ফজর ৪:১৫
    যোহর ১২:১০
    আছর ৪:৫০
    মাগরিব ৬:৪৫
    এশা ৮:১৫