রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন

পর্যটকে স্বস্তি ফিরেছে দ্বীপবাসীর জীবনে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:০৮ অপরাহ্ন

পর্যটকে প্রাণ ফিরেছে সেন্টমার্টিনে; স্বস্তিতে দ্বীপের বাসিন্দারা। দীর্ঘ বিরতির পর দ্বীপের প্রকৃতি ও জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সৌন্দর্যে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। তবে ভ্রমণের সময় পর্যটকদের ১২টি নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ দ্বীপবাসির। একই সঙ্গে দু’মাসের পরিবর্তে অন্তত ৪ মাস পর্যটকদের জন্য দ্বীপ ভ্রমণ উন্মুক্ত করার দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।

প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় দীর্ঘ সময় পর্যটকের পা পড়েনি সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এরই মধ্যে শীতের বার্তায় পাল্টে গেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রকৃতি। চারদিকে বিরাজ করছে অপরূপ সৌন্দর্য। আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে সেন্টমার্টিনে ছুটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা। সেন্টমার্টিনে এখন রাতযাপনের অনুমতি থাকায়, কক্সবাজার থেকে ৬ ঘণ্টা জাহাজে চড়ে দ্বীপে পা পড়তেই ক্লান্তি ভুলে মুগ্ধতায় ছুটছেন পর্যটকরা।
পর্যটক রেহেনা আক্তার বলেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপটা দেখার মতো। প্রথমবারের মতো আসা হয়েছে, জাহাজ থেকে নেমেই সমুদ্রের জলরাশি দেখে তো এক কথায় অবাক হয়েছি। এতো সুন্দর সেন্টমার্টিন।”
রায়হান কাদেরী বলেন, “এবার সেন্টমার্টিন এসে অন্যরকম লাগছে। সমুদ্রের পানি একদম স্বচ্ছ নীল, চারপাশটা অনেক পরিষ্কার। আগের মতো এতো অপরিষ্কার নয়। যা দেখে অনেক ভালো লাগছে।”

রবিউল ইসলাম বলেন, “এতো দিন কেন সেন্টমার্টিন আসতে পারেনি এটা এখন এসে বুঝতে পারছি। আমরা যে নীল জলরাশি খুঁজি সেন্টমার্টিন আসার পরে, সেটা এখন দেখা যাচ্ছে। এটার একমাত্র কারণ হচ্ছে, আমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পেরেছি।”
সেন্টমার্টিন বাজার এলাকা; এখানে পর্যটকের আগমন না থাকায় দীর্ঘ সময় ছিল সুনশান নীরবতা। কিন্তু চলতি মৌসুমে পহেলা ডিসেম্বর থেকে ঘাটে পর্যটকবাহী জাহাজ ভিড়তেই প্রাণ ফিরেছে দ্বীপে। ভ্যানচালক থেকে শুরু করে ডাব বিক্রেতা, বার্মিজ দোকানী, রেস্তোরা ও হোটেল-মোটেলগুলোতে শুরু হয় সুখের ব্যস্ততা। দ্বীপবাসি বলছেন, পর্যটকে স্বস্তি ফিরেছে সবার মাঝে।
ভ্যানচালক ছৈয়দ আলম বলেন, “এতোদিন অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন ঘাটে জাহাজ ভিড়তেই খুবই খুশি লাগছে। এখন আয় বাড়বে, সংসার চালাতে আর কষ্ট হবে না।”
শাহীনা রেস্তোরা শ্রমিক আব্দু রহিম বলেন, “পর্যটক আসাতে আমাদের মুখে হাসি ফুটেছে। অনেক দিন পর পর্যটকের পা পড়েছে দ্বীপে, খুশি না হয়ে থাকতে পারছি না। পর্যটক আসলেই আমাদের ব্যবসা হয়।”
এদিকে পর্যটকদের ভ্রমণে রয়েছে ১২টি নির্দেশনা। দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় এসব নির্দেশনা মানতে উদ্যোগী হয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তারা পর্যটকদের সচেতন করার পাশাপাশি দু’মাসের পরিবর্তে অন্তত ৪ মাস উন্মুক্ত করার দাবিও জানান।
ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইটাব) সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম রাজ বলেন, “পৃথিবীর আর কোথাও নেই, পরিবেশের দোহায় দিয়ে ট্যুরিজম বন্ধ হয়ে যায়। আর ট্যুরিজমকে বন্ধ করে কোন দিনই পরিবেশ রক্ষা হয় না। সরকারের প্রতি অনুরোধ-পর্যটন মৌসুমে সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। অন্তত ৪ মাস পর্যটকদের সেন্টমার্টিন খোলা রাখা হোক।”
সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ আবদুর রহিম জিহাদী বলেন, “গেলো ১০ মাসে সেন্টমার্টিনের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা শুধুমাত্র ২ মাসে পুষিয়ে নেয়া কোনোভাবে সম্ভব হবে না। আমরা দ্বীপবাসির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি- পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দু’মাস উন্মুক্ত রাখার স্থলে ৪ মাস করা হোক। কারণ ৪ মাসের আয় দিয়ে দ্বীপবাসি ভালভাবে চলতে পারবে।”
প্রায় ৮ বর্গ-কিলোমিটার আয়তনের এই সেন্টমার্টিন দ্বীপে বসবাস করছেন স্থানীয় ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দা। যাদের জীবিকার প্রধান উৎস পর্যটন ব্যবসা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো সংবাদ পড়ুন...
  • নামাজের সময়সূচি
  • রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সূর্যোদয় :- ৫:১০ সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯
    নাম সময়
    ফজর ৪:১৫
    যোহর ১২:১০
    আছর ৪:৫০
    মাগরিব ৬:৪৫
    এশা ৮:১৫