গত সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন রিপন মিয়া। এরপর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন টেলিভিশন, অনলাইন ও প্রিন্টমিডিয়ায়। মুহূর্তেই ভাইরাল হয় রিপনের পোস্ট।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নেত্রকোণা সদরের দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নে তার নিজ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবন নির্মাণের কাজে ব্যস্ত মিস্ত্রিরা। সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। এ সময় তিনি প্রাণনাশের হুমকি ও তার পরিবারকে হেনস্তার অভিযোগের কথাও জানান।
তিনি বলেন, ‘মূল কথা হলো, আমাদের নেত্রকোণার মানুষ ভালো না। একজনের ভালো আরেকজন সহ্য করতে পারে না। আপনি জানেনই— কেউ উপরে উঠলে অন্যরা টেনে নিচে নামিয়ে ফেলে। এলাকার মানুষ কেমন, সেটা সেখানে থাকলেই বোঝা যায়। ক্ষেতের পাশে ক্ষেত থাকলে যেমন অনেক কিছু বুঝা যায়।’
ফেসবুকে দেওয়া অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে রিপন মিয়া বলেন, ‘মূল সমস্যা হলো, কারো ভালো কেউ দেখতে পারে না। ভাইরাল হওয়ার পর থেকে যখন টাকা-পয়সা আসা শুরু হলো, তখন থেকেই ঝামেলা শুরু। একজন আমাকে দুই কোটি টাকার অফার দিয়েছিল তার সঙ্গে কাজ করার জন্য। আমি রাজি না হওয়ায় এসব ঝামেলা তৈরি হয়েছে। বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে আরও অনেকে কনটেন্ট বানানো শুরু করেছে। কিন্তু তারা আমার মতো জনপ্রিয় হতে পারছে না। তারাই এই ঝামেলাটা তৈরি করেছে। তবে আমি এখন রাজি হয়েছি— তারা দুই কোটি টাকা ক্যাশ দেবে। স্ট্যাম্পে চুক্তি করে এক বছরের জন্য তাদের সঙ্গে কাজ করব। সব ঠিকঠাক থাকলে সেই চুক্তি অনুযায়ী কাজ করব।’
ফেসবুকে প্রাণনাশের হুমকি সংক্রান্ত পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন করলে রিপন মিয়া বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি সরাসরি কিছু বলতে পারব না। আমার ম্যানেজার আছে, তার সঙ্গে কথা বলতে হবে। বিষয়গুলো জটিল, আপনি বুঝতে পারছেন। আমি লেখাপড়া জানি না। “ক” লিখতে গিয়ে কলম ভেঙে ফেলি। বাংলা সামনে এনে দিলে পড়তে পারি না। তাহলে ওই পোস্ট আমি কীভাবে করব, বুঝে নিন।’
টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বাড়িতে ছিলাম না, এমন সময় তারা হুট করে এসে ভিডিও করা শুরু করে। আমি চাইলে টেলিভিশনের নাম বলতে পারতাম, কিন্তু আমার পোস্টে কোনো টেলিভিশন বা সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করিনি।’
প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার পরও থানায় অভিযোগ না করার বিষয়ে রিপনের বক্তব্য, ‘আমি ঝগড়া করার মানুষ না। আজ মরলে কাল দুই দিন। কাউকে অসম্মান করতে চাই না। অনলাইনে কনটেন্ট বানাই— এটা আজ আছে, কাল নেই। তাহলে খারাপ ব্যবহার করে লাভ কী? আমি এক বছরের জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছি, তবে তারা আমাকে দিয়ে অসামাজিক কোনো কাজ করাতে পারবে না।’
কেন তিনি ওই চুক্তিতে বাধ্য হচ্ছেন— এমন প্রশ্নে রিপন মিয়া বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে যা সরাসরি বলা যায় না, বুঝে নিতে হয়। কিছু জিনিস দেখেও চোখকে বলি দেখো না, কানকে বলি শুনো না— এটাই বাস্তবতা। এখন আমি যাই, অনেক ব্যস্ততা আছে। আসসালামু আলাইকুম। মাইন্ড কইরেন না, মাইন্ড করলে সাইন করতে পারবেন না।’
প্রসঙ্গত, নেত্রকোণা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের রিপন মিয়া পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ২০১৬ সালে তিনি ফেসবুকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। ‘হাই আই অ্যাম রিপন ভিডিও’, ‘আই লাভ ইউ, এটাই বাস্তব’ সংলাপগুলো ভাইরাল হওয়ার পর অল্প সময়েই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বর্তমানে তার ফেসবুক পেজে ফলোয়ার সংখ্যা ১৯ লাখের বেশি।
সুত্র: ঢাকা পোস্ট
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |