মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬ অপরাহ্ন

জেলার শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক রেজিয়া পারভীন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৩৩ অপরাহ্ন

কক্সবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন রেজিয়া পারভীন। তিনি রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাছাই প্রতিযোগিতায় তিনি জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হন।
ইতিপূর্বে তিনি উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হন। জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে গুণী শিক্ষক সম্মাননা অর্জনের জন্য সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি রেজিয়া পারভীন বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহায়তায় পরিচালিত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)-র সাথে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছেন।
জানা গেছে, ব্যক্তিগত জীবনে সংগ্রাম জয় করেই আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন রেজিয়া পারভীন। দশম শ্রেণির ছাত্রী থাকতেই বিয়ে হয় তাঁর। সংসার ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করেও থেমে থাকেননি তিনি। নববধূ হয়েও হেঁটে গেছেন সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে, দিয়েছেন এসএসসি পরীক্ষা। ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনার পথে বাঁধা আসলেও শাশুড়ি ও স্বামীর সহযোগিতায় গোপনে ভর্তি হয়ে চালিয়ে যান শিক্ষাজীবন। সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষার হলে অংশ নেওয়ার দৃঢ়তা তাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে তোলে।
পরবর্তীতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডিপিএড সম্পন্ন করে বর্তমানে বি.এড অধ্যয়নরত। শিক্ষকতায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা, নতুন শিক্ষণ পদ্ধতির প্রয়োগ এবং দায়িত্বশীলতার কারণে তিনি হয়ে ওঠেন সবার প্রেরণার প্রতীক।
উল্লেখ্য, রেজিয়া পারভীন ২০২৪ সালেও উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবক নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে তিনি জাতীয় পর্যায়ে সিপিপি পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও ২০২৩ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) এর ডেপুটি টিম লিডার হিসেবে আর্ন্তজাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবসে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ভলান্টিয়ার এর পুরস্কার পান। ২০১৪ সাল থেকে রেজিয়া পারভীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এ বিষয়ে রেজিয়া পারভীন বলেন, ‘এই সম্মান আমার একার অর্জন নয়। এটি আপনাদের সবার দোয়া, ভালোবাসা ও সহযোগিতার ফল। সবাই দোয়া করবেন যেন আগামী প্রজন্মকে আরও সুন্দরভাবে, আদর্শবান ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে আজীবন নিবেদিত থাকতে পারি।’

শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে অবদানের পেছনে শক্তি যুগিয়েছেন স্বামী মনজুর হাসান, পাশাপাশি পরিবারের সকল সদস্য মা বাবা ভাই বোনের অবদানকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। এছাড়া এগিয়ে চলায় প্রেরণার উৎস হিসেবে বাবা-মা, শাশুড়ির প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। রেজিয়া পারভীনের স্বামী মনজুর হাসান একটি বেসরকারি সংস্থা দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি। রেজিয়া পারভীন দুই পুত্র সন্তানের জননী। বড় ছেলে মোহাম্মদ রেজাউল হাসান ফাহিম বাংলাবাজার আইডিয়াল ইন্সটিটিউটের নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে এবং ছোট ছেলে মোহাম্মদ লাবিব হাসান আয়ান পেঁচারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে অধ্যয়নরত। রেজিয়া পারভীন রামু সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হকের ভাগ্নী।
উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় রেজিয়া পারভীন রামু উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুন নাহার এবং কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহীন মিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন রামু উপজেলা সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আলম জানান- রেজিয়া পারভীন জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে রামুবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। একজন নারী হয়ে তিনি শিক্ষকতা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সেবামূলক কর্মকান্ডে নিরলসভাবে কাজ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। রেজিয়া পারভীনের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় প্রমাণ করে ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং আল্লাহর উপর ভরসা থাকলে কোনো বাধাই একজন নারীর অগ্রযাত্রা থামাতে পারে না। তাঁর সংগ্রামী পথচলা নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো সংবাদ পড়ুন...
  • নামাজের সময়সূচি
  • মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • সূর্যোদয় :- ৫:১০ সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯
    নাম সময়
    ফজর ৪:১৫
    যোহর ১২:১০
    আছর ৪:৫০
    মাগরিব ৬:৪৫
    এশা ৮:১৫