কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আইন অনুষদ ও প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীদের মাঝে একাডেমিক ভবনের নেমপ্লেট নিয়ে চলছে মতানৈক্য। এ নিয়ে উপাচার্যের কাছে গেলে তিনি একতরফা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাডেমিক ভবন-৪ এ নিচের তলায় আইন অনুষদ তাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় প্রকৌশল অনুষদের দু’টি বিভাগের কার্যক্রম চলমান। এ ভবনে বাইরের দেয়ালে আগে থেকেই ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং নামে নেমপ্লেট ছিল। ফ্যাকাল্টি অব ল’ নামে নেমপ্লেট ছিল ভবনটি ভেতরের নিচতলায়। তবে সোমবার আইন অনুষদের ওই নেমপ্লেট খুলে ভবনের প্রবেশদ্বারে স্থাপন করলে এ নিয়ে উভয় ফ্যাকাল্টির শিক্ষকের মাঝে মতবিরোধ তৈরি হয়। শিক্ষকদের এ মতবিরোধ শিক্ষার্থীদের মাঝে কাদা ছোড়াছুড়িতে রূপ নেয় মঙ্গলবার। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে একে অপরের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতে থাকেন।
‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)’ নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপে শাহরিয়ার নাফিস জয় নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, গতকাল ভর্তি-ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে ভাইবা দিতে এসে গেইটে দেখে লেখা ‘Faculty of Law’ তাদের প্রশ্ন তাহলে ‘Faculty of Engineering ‘ কোনটা? ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্টরা কি আন্দোলন করে আলাদা ভবন আনছিল এইসব কথা শুনার জন্য?
আইন অনুষদের মিনহাজ রহমান নামের এক শিক্ষার্থী কমেন্টে লিখেন, ‘আমাদের বিভাগ নিচ তলায়, তাই নিচতলায় লেখা হয়েছে। এখানে সমস্যাটা কোথায়?
প্রকৌশল অনুষদের শাহিন মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, দফায় দফায় আন্দোলনের ফলে আজকের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি। যেখানে আমাদের নিজস্ব পরিচয় সেখানে আইন অনুষদের নেমপ্লেট যা আমাদের পরিচয় নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মোহাম্মদ রেজাওনুল ইসলাম গণি নামের আইন অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ফ্যাকাল্টির জন্য আমরা আন্দোলন করেছি, এটা আমাদের অধিকার। আমাদের ফ্যাকাল্টির নাম আমাদের অস্তিত্বকে প্রমান করে, আর আমরা চাই নাম যেভাবে আছে সেভাবেই ওই জায়গায় থাকবে।
আইন অনুষদের ওসমানী রাকিব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরাও তো এই ভবনে অনুষদের দাবীতে বারবার আন্দোলন করেছে। এই ভবনের নিচতলায় আইন অনুষদ বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেই। তারা যেমন আন্দোলনের মাধ্যমে অনুষদের জন্য জায়গা পেয়েছে। আমরাও আন্দোলন করে আমাদের জায়গা আদায় করেছি।
ঘটনাটি শেষ পর্যন্ত উপাচার্য বরাবর যায়। উপাচার্য প্রকৌশল অনুষদের নেমপ্লেট রেখে আইন অনুষদের নেমপ্লেট খুলে ফেলার জন্য বলেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এর দপ্তরে গিয়ে ও ফোনে তাকে পাওয়া না যাওয়ায় বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
এ বিষয়ে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম বলেন, আমরা উপাচার্য স্যারের সাথে অনুষদের নাম নিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল সেটা নিয়ে কথা বলেছি। উপাচার্য নেমপ্লেট আমাদেরকে খুলে ফেলতে বলেছে। তিনি আরও বলেছেন, যদি প্রয়োজনে এই ভবনের অন্যকোন নাম দেওয়া যায় সেটিও আমরা দিব।
প্রকৌশল অনুষদের নেমপ্লেটও খুলে ফেলতে বলবেন বলেছেন তিনি।
তবে প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, যেহেতু এই একাডেমিক ভবনে প্রথম থেকে আমরা রিপ্রেজেন্ট করে আসছি। প্রশাসনের ডিসিশন হচ্ছে প্রবেশদ্বারে যে নেমপ্লেট আছে সেটা আগে খুলবে। আমাদেরটা ত আর প্রবেশদ্বারে না। এ ছাড়া প্রবেশদ্বারে যে নাম আসবে সে নামে সে বিল্ডিংটা রিপ্রেজেন্ট হয়। চাইলে একাডেমিক ভবনকে অন্য নাম দিয়ে দিতে পারে।
হাবিবুর রহমান / কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
১৭ জানুয়ারি, ২০২৩
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |