কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ স্বর্ণালী রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে সুপারির বাজার। বাম্পার ফলন উৎপাদন হওয়ায় বাগান মালিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। এখানকার উৎপাদিত সুপারি স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে মধ্যপ্রাচ্য রপ্তানি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছেন, উপজেলার জালিয়া পালং, রত্না পালং, হলদিয়া পালং পালংখালী ও রাজা পালং ইউনিয়নে ৯ শত ৫০ হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে রয়েছে ১২ শত ৬০ হেক্টর। চলতি মৌসুম দুই উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে, ৪০ হাজার ৭ শত ৮০ মেট্রিক টন।
দক্ষিণ কক্সবাজারের সর্ববৃহৎ সুপারির বাজার হচ্ছে উখিয়ার সোনারপাড়া বাজার ও টেকনাফের শাপলা পুর বাজার।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা হয়ে গেছে, প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার সোনারপাড়া হাট বসে। বিক্রির জন্য আনা স্বর্ণালী রঙের সুপারির স্তুপ পুরো বাজার রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। সোনার পাড়া পান – সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ সালামত উল্লাহ কালু জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করতে আসে সোনারপাড়া বাজারে। ট্রাক ভর্তি করে ঢাকা চট্টগ্রাম রংপুর সিলেট যশোর সাতক্ষীরা অঞ্চলে নিয়ে যায়। প্রতিহাঁটে দিন কোটি টাকার উপরে সুপারি ক্রয় বিক্রি হয়।
আলী আকবর সওদাগর জানান, এখানকার সুপারি কদর রয়েছে দুবাই সৌদি আরব ও কাতার সহ মধ্যপ্রাচ্যে। ব্যবসায়ীরা রপ্তানি করে বিদেশী মুদ্রা দেশে অর্থনীতিতে যোগান দিচ্ছে।
ইনানী গ্রামের এখলাছুর রহমান জানান, তার ৪০ শতক জমির বাগানে ৪৫০ থেকে ৫৩০ টি সুপারি গাছ রয়েছে। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন উৎপাদন হওয়ায় ৪ লাখ টাকার মত সুপারি বিক্রি করেছে। ব্যবসায়ী আলী আকবর জানান, প্রতিপণ (৮০ টি) সুপারি ৫ শত টাকা থেকে ৬ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, সোনার পাড়া বাজার ছাড়াও কোট বাজার, মরিচ্যা বাজার,রুমখা বাজার, উখিয়া সদর, কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, টেকনাফ উপজেলার শাপলাপুর, জাহাজপুরা, শীলখালী, হোয়াইক্যংয়, হৃীলা, টেকনাফ সদর, শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং সহ সহ ১৫ টি বাজারে সুপারির হাট বসে।
সোনার পাড়া পান – সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক জানান, ইনানী, নিদানিয়া, মনখালি, মাদার বুনিয়া, সোনার পাড়া, জালিয়া পালং, সোনাই ছড়ি,ভালুকিয়া, তুতুরবিল, সহ ৬৪ টি গ্রামে শত শত বাগানে সুপারির আশানুরূপ ফলন উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশি বাগান মালিক।
দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফ উৎপাদিত সুপারি ২ শত থেকে ২ শত ২০ কোটি টাকার টাকার মত ক্রয় বিক্রি হয়ে থাকে।
উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামানাশিস সরকার জানান, আবহাওয়ার পরিবেশ অনুকূল, প্রযুক্তি ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যা করায় এবারে সুপারির বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। যা গত বছরের লক্ষ্য মাত্রাকে ছাড়িয়ে উৎপাদনে রেকর্ড অর্জন করেছে।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে রোপন, সুপারি সংরক্ষণ সহ নানা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়।
বাগান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাস থেকে সুপারির ফলন পাকা শুরু করেছে। বর্তমানে সুপারির ভর মৌসুম। যা আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত থাকবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, কক্সবাজার জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ডঃ বিমল কুমার প্রমাণিক জানান, সুপারি হচ্ছে অর্থকরী ফসল। এ ফসলকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া দিন দিন সুপারি বাগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
| সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
| নাম | সময় |
| ফজর | ৪:১৫ |
| যোহর | ১২:১০ |
| আছর | ৪:৫০ |
| মাগরিব | ৬:৪৫ |
| এশা | ৮:১৫ |