বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলারে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী গুলি চালিয়েছে। এতে মো. ওসমান (৫০) নামে এক জেলে নিহত হয়েছে এবং মো. রফিক (৩০) ও রাজু (৪৫) নামে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া আরও ৫৫ জন মাঝি-মাল্লাসহ ছয়টি ফিশিং ট্রলার অপহরণ করে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মিয়ানমার নৌ বাহিনীর গুলিতে একজন জেলে নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে মিয়ানমার নৌ বাহিনী কর্তৃক অপহৃত ৪০-৫০ জন জেলেকে ট্রলারসহ বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জলসীমার দিকে রওনা হয়েছে।
শাহপরীর দ্বীপের ট্রলার মালিকদের বরাতে জানা যায়, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে মৌলভীর শিল নামের মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জেলে মো. ওসমান উপজেলার সাবরাং ইউপির শাহপরীর দ্বীপ কোনারপাড়ার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। নিহত ও আহত জেলেরা শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে বলে জানা গেছে।
নিহত মো. ওসমানের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, সাইফুল কোম্পানির বোট নিয়ে মাছ ধরতে যায় আমার স্বামী। সাগরে বার্মার (মিয়ানমার) নৌ বাহিনী মাছ ধরার বোট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে আমার স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এবং আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। পাঁচ ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে সন্দিহান বলে জানান তিনি।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানান, বুধবার সাগরে মাছ ধরার সময় মিয়ানমার নৌ বাহিনীর সদস্যরা ফিশিং ট্রলার ধাওয়া করে গুলি চালায় এবং ট্রলারটি মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলে মারা যায়। পরে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের নৌ বাহিনী ট্রলারটি ছেড়ে দিলে নিহত জেলের মরদেহ এবং গুলিবিদ্ধ ২ জেলেসহ ১১জন জেলে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে এসে পৌঁছেছে।
তিনি আরও বলেন, নিহত জেলেকে নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া অপহৃত অন্য পাঁচটি ট্রলারের মালিকরা হলো-শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান (২টি ট্রলার), মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ এবং তার ভাই আতাউল্লাহ, উত্তর পাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোতে ৪৭ জন মাঝি-মাল্লা ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অপহৃত ট্রলারের মালিকদের বরাতে জানা যায়, অপহৃত পাঁচটি ট্রলারসহ ৪৭ জন মাঝিমাল্লা বর্তমানে সেন্টমার্টিনে কোস্ট গার্ডের হেফাজতে রয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি সত্য। তবে ঘটনাস্থলটি বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের আওতাধীন হওয়ায় তাঁরাই বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন।
এবিষয়ে কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |