সময় নিউজ:: কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় আবদুল খালেক নামের এক দখলদার সাংবাদিকদের উপর হামলা চালিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে ওই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে অভিযানে পরিবেশ অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানে নদীর তীরবর্তী এলাকায় সীমানা পিলার দিয়ে দখল করা শতাধিক পিলার ভেঙে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ২ শতাধিক ভবন ও ঘর ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, উচ্ছেদ চলাকালে দুপুর ২টার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালান দখলদার আবদুল খালেকের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন যুবক। এ সময় ডিবিসি নিউজ ও বিডিনিউজের প্রতিনিধি শংকর বড়ুয়া রুমি, আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি মাইন উদ্দিন শাহেদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম লিপুসহ কয়েকজন কয়েকজন আহত হন।
এ সময় পুলিশসহ অপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার সময় আবদুল খালেককে পিস্তল হাতে নিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দিতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিবেদক তোফায়েল আহমদ।
তিনি জানান, সাংবাদিকরা মূলত উচ্ছেদের সংবাদ সংগ্রহ করছেন। সেখানে তাদের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান জানান, উচ্ছেদ চলমান রয়েছে, থাকবে। এখানে অনেকভাবে উচ্ছেদ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। অনেকেই আইনজীবী এনে উচ্ছেদে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশে এ উচ্ছেদ। নদীর সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পর্যন্ত অভিযান চলবে। সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ৫ বছর ধরে কক্সবাজার শহরের প্রাণ হিসেবে পরিচিত বাঁকখালী নদীর তীরে দখলের মহোৎসব চলছে। নদীর তীরে ৬০০ হেক্টর প্যারাবন নিধন করে একে একে চলছে স্থাপনা নির্মাণের কাজ। শুধুমাত্র ২ মাসের ব্যবধানে নদীর তীরের শত হেক্টর জমি দখলের পর চলছে স্থাপনা নির্মাণ। খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাট পয়েন্টে বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সেতু। এই সেতুর পাশাপাশি সংযোগ সড়ক তৈরি হওয়ায় সড়কের দুই পাশে প্যারাবন ধ্বংস করে নদী দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে প্রভাবশালী চক্র। একে এক দখলের মহোৎসব চললে। যদিও এখানে একটি নদী বন্দর হওয়ার জন্য সরকারের প্রজ্ঞাপন রয়েছে। এর জন্য এ জমি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য হাইকোর্টের রায় রয়েছে।
এর পরিপেক্ষিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো আবু সুফিয়ান।
পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, দেরিতে হলেও বাঁকখালী নদী দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করায় প্রশাসন সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে অভিযানে পুরো জায়গা উদ্ধার করে নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় দখলদার চক্র সুযোগ নেবে এবং অভিযান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি করবে। কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটের বদরমোকাম থেকে পেশকারপাড়া পর্যন্ত ৫টি দাগে নদী, খাল ও বালুচর শ্রেণির ১৪৬ একর বাঁকখালী নদীর সরকারি জমি গত দুই বছরে প্রকাশ্যে দখল করা হয়েছে। এসব জমির ১০০ একর প্যারাবন, জীববৈচিত্র্য ও পাখির আবাসস্থল ধ্বংস করা হয়েছে। এসব দখলে কস্তুরাঘাটের বদরমোকাম কেন্দ্রিক ২টি এবং পেশকার পাড়াকেন্দ্রিক একটি চক্র জড়িত।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |