টেকনাফের হ্নীলায় কলিম উল্লাহ বাহাদুর (৫০) নামে এক জামায়াত কর্মী হামলার শিকার হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদার আজম সরকারের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয় বলে জানা গেছে।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষ করে বের হওয়ার পথে ১০/১২ জনের একটি স্বশস্ত্র দল অতর্কিতভাবে এ হামলা চালায়। এসময় তারা কলিম উল্লাহকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় মুসল্লিদের বাঁধার মুখে ব্যর্থ হয়। পরে হাত, পা ও মাথায় গুরুতর আঘাত করে ফেলে রেখে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে চলে যায়।
হামলার শিকার কলিম উল্লাহ উপজেলার হ্নীলা ইউপির রঙ্গিখালী এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় মুসল্লীদের বরাতে জানা যায়, মাগরিবের নামাজের পর শাহ আজমের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি স্বশস্ত্র দল মাদ্রাসা মাঠে কলিম উল্লাহকে বেধড়ক মারধর করে। ওই সময় কলিম উল্লাহকে উদ্ধার করতে মুসল্লীরা এগিয়ে আসতে চাইলে শাহ আজম গুলি করার হুমকি দিলে ভয়ে আর কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে আসেন।অবস্থার বেগতিক দেখে স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক ডা. মুফিজুর রহমান প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টেকনাফ সদর হাসপাতাল হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এবিষয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা গিয়াসউদ্দিন বলেন, কলিম উল্লাহ একজন জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। তার উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
টেকনাফ উপজেলা জামায়াত আমীর মাওলানা রফিক উল্লাহ বলেন, এই সময়ে এসেও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক জামায়াত কর্মীর উপর হামলা ‘দুঃসাহস’ ছাড়া কিছুই না। আত্মস্বীকৃত এই ইয়াবা গডফাদারকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বৃহত্তর কর্মসূচী দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শাহ আজমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও তার সহযোগীরা কল রিসিভ করে তিনি নাই বলে কল বিচ্ছিন্ন করে দেন।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে অবগত হওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঘটনার নেতৃত্বদাতা শাহ আজম সরকার ও তার পিতা জামাল মেম্বার দুজনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদার। এই সিন্ডিকেটের হাত ধরে সীমান্ত শহর টেকনাফে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালানের বিস্তৃতি ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহ আজম সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের ১০টি মামলা রয়েছে। মাদক কারবারী শাহ আজম সরকারের বিরুদ্ধে মামলার প্রাথমিক তথ্য:
১. জি আর মামলা নং- ৩৪৮/২০১৮ইং (টেকনাফ), টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ২৬, তারিখ:- ১৫/০৭/২০১৮ইং, ধারা:- ৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ দঃবিঃ
২. জি আর মামলা নং- ৪১৩/২০২১ইং (টেকনাফ), টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ৯৬, তারিখ:- ২৩/০৫/২০২১ইং, ধারা:- ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০(গ)/৪১
৩. জি আর ৬১৯/২০১৭ইং (টেকনাফ), টেকনাফ থানার মামলা নং- ৬৩, তারিখ:- ২৬/০৭/২০১৭ইং, ধারা:-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৫৪/৩৮০ দঃবিঃ
8. টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ২৬, তারিখ:- ১৫/০৭/২০১৮ইং, ধারা:- ৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ দঃবিঃ
৫. টেকনাফ থানার মামলা নং- ৪৮, তারিখ:- ১০/১১/২১৮ইং, ধারা- ১৮৭৮ ইং সনের অস্ত্র আইনের ১৯এ/১৯ (এফ)
৬. টেকনাফ থানার মামলা নং- ৪৯, তারিখ:- ১০/১১/২০১৮ইং, ধারা:- ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর ৯ (খ)/২৫,
৭. টেকনাফ থানার মামলা নং- ৫০, তারিখ:- ১০/১১/২০১৮ইং, ধারা:- ১৮৬/৩২৩/৩৩৩/৩৫৩/৩০২/৩৪ দঃবিঃ
৮. সিএমপি বায়েজিত বোস্তামী থানা মামলা নং- ২০, তারিখ: ১০/০৮/২০১৭ইং, ধারা:- ২০১২ সালের মানি লডারিং প্রতিরোধ আইন ০৪ (২)
৯. জি আর ৮৮৫/২০২৩ইং (টেকনাফ), টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ৫৮, তারিখ:- ২৩/১২/২০২৩ইং, ধারা- ১৮৭৮ ইং সনের অস্ত্র আইনের ১৯এ/১৯ (এফ)
১০. জি আর ৮৮৬/২০২৩ইং (টেকনাফ), টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ৫৯, তারিখ:- ২৩/১২/২০২৩ইং, ধারা- ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০(গ)/৪১
| সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
| নাম | সময় |
| ফজর | ৪:১৫ |
| যোহর | ১২:১০ |
| আছর | ৪:৫০ |
| মাগরিব | ৬:৪৫ |
| এশা | ৮:১৫ |
যোগাযোগ: 01819-065312, 01866-781764, 01857-646711
