এএসআই মোশাররফ হোসেন। টেকনাফ মডেল থানার আলোচিত সমালোচিত একটি নাম। আওয়ামী আমলে টেকনাফে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছিলো সে। তার ভয়ে তটস্থ ছিলো সাধারণ মানুষ।
জুলাই এর গণঅভ্যূত্থানের আন্দোলনে ছিলেন আওয়ামী ক্যাডারের ভূমিকায়। আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর লাঠিপেটার পাশাপাশি ছাত্রদের আটক করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশেষ করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের বিএনপি, জামায়াতের কর্মীরা ছিলো তার চক্ষুশূল। সুযোগ পেলে নানা অজুহাতে তাদেরকে লাঠিচার্জ করতেন এবং জোরপূর্বক অর্থ আদায় করতেন। এমন গুরুতর অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় তাকে কুতুবদিয়া থানায় বদলির আদেশ দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু বদলির আদেশ একমাস পার হলেও তিনি এখনো টেকনাফ মডেল থানায় বহাল থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা।
আওয়ামী আমলে এএসআই মোশাররফের অত্যাচারের ভয়ে বিএনপি, জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী ঘরছাড়া হয়ে পথেঘাটে নির্ঘুম রাত কাটান।
মোশাররফের হাতে নির্যাতনের শিকার বিএনপির এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, মোশাররফের মতো আচরণকারী কখনো পুলিশ কর্মকর্তা হতে পারেনা; সে একজন আওয়ামী ক্যাডার। পট পরিবর্তনের পরে সে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন মামলার আসামিদের ফোন করে অভিযানের খবর জানিয়ে দিতেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিও মোশাররফ কোন অদৃশ্য শক্তির বদৌলতে টেকনাফ মডেল থানায় বহাল তবিয়তে আছেন- জানা নেই৷ অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারের এই প্রেতাত্মাকে চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তিনি।
জিয়াউল ইলহাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে আটক করে নিয়ে যায় মোশাররফ। পুরো রাত আটকে রেখে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া পরবর্তীতে আন্দোলনে অংশ নিলে তার মা-বাবাকে আটকের হুমকি দেয়।
ওসামা নামে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, এএসআই মোশাররফ এর ভয়ে সব সময় শঙ্কায় থাকতাম। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দোকানে বসার সুযোগ দিলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের হাতে মারধরের শিকার হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। ওই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পান এএসআই মোশাররফ। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের অজুহাতে তিনি আমার নিকট থেকে টাকা নেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ওই অভিযোগের কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
টেকনাফ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নুরুল হুদা বলেন, অগ্রিম চুক্তিতে দোকান দখলসহ হ্নীলা বাজারের এক চায়ের দোকানে ওপেন ঘুষ বাণিজ্যের হাট বসাতেন এএসআই মোশাররফ। এছাড়া ৩ আগস্ট তিনি আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার চেষ্টা চালান। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার পরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি কীভাবে এখনো বহাল থাকেন- এমন প্রশ্ন তোলেন বিএনপির ওই নেতা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের কাজের কিছু সিস্টেম রয়েছে।তবে তিনি এই সপ্তাহের মধ্যে চলে যাবেন।
সূর্যোদয় :- ৫:১০ | সূর্যাস্ত :- ৬:৪৯ |
নাম | সময় |
ফজর | ৪:১৫ |
যোহর | ১২:১০ |
আছর | ৪:৫০ |
মাগরিব | ৬:৪৫ |
এশা | ৮:১৫ |